Link to home pageLanguagesLink to all Bible versions on this site
23
সাতটি ধিক্কারবাণী
1 তারপর যীশু সকল লোকদের ও তাঁর শিষ্যদের বললেন, 2 “শাস্ত্রবিদ ও ফরিশীরা মোশির আসনে বসে। 3 সেই কারণে, তোমরা অবশ্যই তাদের কথা শুনবে ও তারা যা বলে তা পালন করবে। কিন্তু তারা যে কাজ করে, তোমরা সেই কাজ করবে না, কারণ তারা যা প্রচার করে, তা নিজেরা অনুশীলন করে না। 4 তারা দুর্বহ বোঝা বেঁধে সেগুলি মানুষদের কাঁধে চাপায়, কিন্তু তারা একটি আঙুল দিয়েও তা সরাতে ইচ্ছুক হয় না।

5 “তারা যা কিছুই করে, তা লোক-দেখানো মাত্র। তারা তাদের কবচ[a] প্রশস্ত ও আলখাল্লার ঝালর লম্বা করে। 6 তারা ভোজসভায় সব থেকে সম্মানজনক আসন ও সমাজভবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আসনগুলি পেতে ভালোবাসে। 7 তারা হাটেবাজারে সম্ভাষিত হতে ভালোবাসে ও চায় যেন লোকেরা তাদের ‘রব্বি’ বলে ডাকে।

8 “কিন্তু তোমরা ‘রব্বি’ বলে সম্ভাষিত হোয়ো না, কারণ তোমাদের গুরুমহাশয় কেবলমাত্র একজন ও তোমরা পরস্পর ভাই ভাই। 9 আবার পৃথিবীতে কাউকে ‘পিতা’ বলে সম্বোধন কোরো না, কারণ তোমাদের পিতা একজনই, তিনি স্বর্গে থাকেন। 10 আবার কেউ তোমাদের ‘আচার্য’ বলে যেন না ডাকে, কারণ তোমাদের আচার্য একজনই তিনি খ্রীষ্ট। 11 তোমাদের মধ্যে যে শ্রেষ্ঠ, সে তোমাদের পরিচারক হবে। 12 কারণ যে কেউ নিজেকে উন্নত করে, তাকে নত করা হবে, আর যে কেউ নিজেকে নত করে তাকে উন্নত করা হবে।

13 “শাস্ত্রবিদ ও ফরিশীরা, ভণ্ডের দল, ধিক্ তোমাদের! তোমরা লোকদের মুখের সামনে স্বর্গরাজ্য রুদ্ধ করে থাকো। 14 তোমরা নিজেরা তার মধ্যে তো প্রবেশ করো না অথচ যারা প্রবেশ করতে চেষ্টা করে তাদেরও প্রবেশ করতে দাও না। শাস্ত্রবিদ ও ফরিশীরা, ভণ্ডের দল, ধিক্ তোমাদের! তোমরা বিধবাদের বাড়িশুদ্ধ গ্রাস করো, আর লোক-দেখানো লম্বা লম্বা প্রার্থনা করো। সেই কারণে তোমাদের শাস্তি কঠোরতম হবে।[b]

15 “শাস্ত্রবিদ ও ফরিশীরা, ভণ্ডের দল, ধিক্ তোমাদের! তোমরা একজনকে ইহুদি ধর্মে ধর্মান্তরিত করার জন্য স্থলে ও সমুদ্রে পরিভ্রমণ করে থাকো। আর সে যখন রাজি হয়, তখন তোমরা যেমন নারকীয়,[c] তাকেও তেমনই তোমাদের দ্বিগুণ নরকের উপযুক্ত করে তোলো।

16 “অন্ধ পথপ্রদর্শকেরা, ধিক্ তোমাদের! তোমরা বলো, ‘কেউ যদি মন্দিরের নামে শপথ করে সেটা বড়ো কিছুই নয়, কিন্তু কেউ যদি মন্দিরের সোনার শপথ করে তাহলে সে তার শপথে আবদ্ধ হল।’ 17 মূর্খ অন্ধের দল! কোনটা মহত্তর: সেই সোনা, না সেই মন্দির, যা সোনাকে পবিত্র করে? 18 তোমরা আরও বলো, ‘কেউ যদি যজ্ঞবেদির শপথ করে সেটা কিছুই নয়; কিন্তু কেউ যদি তার উপরে স্থিত নৈবেদ্যের শপথ করে তাহলে সে তার শপথে আবদ্ধ হল।’ 19 অন্ধ মানুষ তোমরা! কোনটা মহত্তর: সেই নৈবেদ্য, না যজ্ঞবেদি, যা নৈবেদ্যকে পবিত্র করে? 20 সেই কারণে, যে যজ্ঞবেদির শপথ করে সে বেদির ও তার উপরে স্থিত সবকিছুরই শপথ করে। 21 আর যে মন্দিরের শপথ করে সে মন্দিরের ও যিনি তার মধ্যে অধিষ্ঠান করেন, তাঁরও শপথ করে। 22 আর যে স্বর্গের শপথ করে, সে ঈশ্বরের সিংহাসন ও যিনি তার উপরে উপবেশন করেন তাঁরও শপথ করে।

23 “শাস্ত্রবিদ ও ফরিশীরা, ভণ্ডের দল, ধিক্ তোমাদের! তোমরা তোমাদের মশলাপাতি—পুদিনা, মৌরি ও জিরার দশমাংশ দিয়ে থাকো কিন্তু বিধানের আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যেমন ন্যায়বিচার, করুণা, বিশ্বস্ততা—এগুলি উপেক্ষা করে থাকো। ভালো হত, তোমরা আগের বিষয়গুলি উপেক্ষা না করে যদি এগুলিও পালন করতে। 24 অন্ধ পথপ্রদর্শক তোমরা! তোমরা মশা ছাঁকো, কিন্তু উট গিলে ফেলো।

25 “শাস্ত্রবিদ ও ফরিশীরা, ভণ্ডের দল, ধিক্ তোমাদের! তোমরা থালাবাটির বাইরেটা পরিষ্কার করে থাকো কিন্তু ভিতরের দিকটা লোভ-লালসা ও আত্ম-অসংযমে পূর্ণ। 26 অন্ধ ফরিশী! প্রথমে থালাবাটির ভিতরটা পরিষ্কার করো তারপরে বাইরের দিকটিও পরিষ্কার হবে।

27 “শাস্ত্রবিদ ও ফরিশীরা, ভণ্ডের দল, ধিক্ তোমাদের! তোমরা চুনকাম করা কবরের মতো! সেগুলি বাইরে থেকে দেখতে তো সুন্দর কিন্তু ভিতরে মরা মানুষের হাড় ও সব ধরনের অশুচি বিষয়ে পরিপূর্ণ। 28 একইভাবে, লোকেদের কাছে বাহ্যিকভাবে তোমরা নিজেদের ধার্মিক দেখাও কিন্তু অন্তরে তোমরা ভণ্ডামি ও দুষ্টতায় পূর্ণ।

29 “শাস্ত্রবিদ ও ফরিশীরা, ভণ্ডের দল তোমরা! তোমরা ভাববাদীদের সমাধি নির্মাণ করে থাকো এবং ধার্মিকদের কবর সুশোভিত করো। 30 আর তোমরা বলো, ‘আমরা যদি পূর্বপুরুষদের সময়ে থাকতাম তাহলে ভাববাদীদের রক্তপাত করায় তাদের সঙ্গ দিতাম না।’ 31 এভাবে তোমরা নিজেরাই নিজেদের বিষয়ে সাক্ষ্য দাও যে যারা ভাববাদীদের হত্যা করেছিল তোমরা তাদেরই বংশধর। 32 তাহলে, তোমাদের পূর্বপুরুষেরা যে পাপ শুরু করেছিল তোমরা তারই মাত্রা পূর্ণ করো!

33 “সাপেরা! কালসাপের বংশেরা! তোমরা ন্যায়বিচারের দিন কীভাবে নরকদণ্ড এড়াতে পারবে? 34 সেই কারণে আমি তোমাদের কাছে ভাববাদী, বিজ্ঞ মানুষ ও শিক্ষাগুরুদের পাঠিয়ে চলেছি। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে তোমরা হত্যা করবে, কয়েকজনকে ক্রুশার্পিত করবে। অপরদের তোমরা সমাজভবনে নিয়ে গিয়ে চাবুক দিয়ে মারবে ও এক নগর থেকে অন্য নগরে তাদের তাড়া করবে। 35 এভাবে পৃথিবীতে যত ধার্মিক মানুষের রক্তপাত হয়ে আসছে, সেই ধার্মিক হেবলের[d] রক্তপাত থেকে শুরু করে, বরখিয়ের পুত্র সখরিয়ের[e] রক্তপাত পর্যন্ত, যাকে তোমরা মন্দির ও যজ্ঞবেদির মাঝখানে হত্যা করেছিলে, এদের সকলের রক্তপাতের ফল তোমাদের উপরেই বর্তাবে। 36 আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, এসবই এই প্রজন্মের লোকেদের উপরে এসে পড়বে।

37 “হায়! জেরুশালেম, জেরুশালেম, তুমি ভাববাদীদের হত্যা করো ও তোমার কাছে যাদের পাঠানো হয়, তাদের পাথরের আঘাত করে থাকো। কতবার আমি তোমার সন্তানদের একত্র করতে চেয়েছি, যেমন মুরগি তার শাবকদের নিজের ডানার তলায় একত্র করে, কিন্তু তোমরা ইচ্ছুক হওনি। 38 দেখো, তোমাদের গৃহ তোমাদের জন্য পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে রইল। 39 কারণ আমি তোমাদের বলছি, যতক্ষণ না তোমরা বলবে, ‘ধন্য তিনি, যিনি প্রভুর নামে আসছেন’[f] ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা আর আমাকে দেখতে পাবে না।”

<- মথি 22মথি 24 ->