2 তিনি একটি ছোটো শিশুকে তাঁর কাছে ডেকে সবার মাঝে দাঁড় করালেন। 3 তিনি বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা মন পরিবর্তন করে যদি এই ছোটো শিশুদের মতো না হও তবে কোনোমতেই স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে না। 4 অতএব, যে কেউ এই শিশুর মতো নিজেকে নম্র করে, সেই স্বর্গরাজ্যে সব থেকে মহান। 5 আবার যে কেউ এর মতো এক ছোটো শিশুকে স্বাগত জানায়, সে আমাকেই স্বাগত জানায়।
6 “কিন্তু এই ছোটো শিশুদের যারা আমাকে বিশ্বাস করে, তাদের কোনো একজনকে কেউ যদি পাপ করতে বাধ্য করে, তাহলে তার গলায় বড়ো একটি জাঁতা বেঁধে সমুদ্রের অথৈ জলে ডুবিয়ে দেওয়া তার পক্ষে ভালো হবে। 7 ধিক্কার সেই জগৎকে কারণ জগতের বিভিন্ন প্রলোভন মানুষকে পাপের মুখে ফেলে। এসব বিষয় অবশ্যই উপস্থিত হবে, কিন্তু ধিক্ সেই ব্যক্তিকে যার দ্বারা তা উপস্থিত হবে! 8 যদি তোমার হাত বা পা যদি পাপের কারণ হয়, তা কেটে ফেলে দাও। কারণ দু-হাত ও দুই পা নিয়ে নরকের অনির্বাণ আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার চেয়ে বরং বিকলাঙ্গ বা পঙ্গু হয়ে জীবনে প্রবেশ করা ভালো। 9 আর তোমার চোখ যদি পাপের কারণ হয়, তাহলে তা উপড়ে ফেলো ও ছুঁড়ে ফেলে দাও। দুই চোখ নিয়ে নরকের আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার চেয়ে বরং এক চোখ নিয়ে জীবনে প্রবেশ করা তোমার পক্ষে ভালো।
10-11 “দেখো, এই ছোটো শিশুদের একজনকেও যেন কেউ তুচ্ছজ্ঞান না করে। কারণ আমি তোমাদের বলছি, স্বর্গে তাদের দূতেরা প্রতিনিয়ত আমার স্বর্গস্থ পিতার মুখদর্শন করে থাকেন।*কোনো কোনো পাণ্ডুলিপিতে এরপর আছে, কারণ যা হারিয়ে গিয়েছিল, তা উদ্ধার করার জন্য মনুষ্যপুত্র এসেছেন।
18 “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা পৃথিবীতে যা আবদ্ধ করবে তা স্বর্গেও আবদ্ধ হবে এবং পৃথিবীতে যা কিছু মুক্ত করবে তা স্বর্গেও মুক্ত হবে।
19 “আবার, আমি সত্যি বলছি, তোমাদের মধ্যে দুজন এই পৃথিবীতে একমত হয়ে যা কিছু চাইবে, আমার স্বর্গস্থ পিতা তোমাদের জন্য তাই করবেন। 20 কারণ যেখানে দুই কিংবা তিনজন আমার নামে একত্র হয়, সেখানে আমি তাদের মধ্যে উপস্থিত।”
22 যীশু উত্তর দিলেন, “আমি তোমাকে বলছি, সাতবার নয়, কিন্তু সত্তর গুণ সাতবার পর্যন্ত।
23 “এই কারণে স্বর্গরাজ্য এমন এক রাজার মতো, যিনি তাঁর দাসদের কাছে হিসেব চাইলেন। 24 হিসেব নিকেশ করার সময় একজন দাস, যে তাঁর কাছে দশ হাজার তালন্তের§অর্থাৎ, কয়েক কোটি টাকা। ঋণী ছিল, তাকে নিয়ে আসা হল। 25 যেহেতু সে ঋণ শোধ করতে অক্ষম ছিল, তাঁর মনিব আদেশ দিলেন যেন তাকে, তার স্ত্রী ও সন্তানদের ও তার সর্বস্ব বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করা হয়।
26 “এতে সেই দাস তাঁর সামনে নতজানু হয়ে পড়ল, ‘আমার প্রতি ধৈর্য ধরুন,’ সে মিনতি জানাল, ‘আমি সব দেনা শোধ করে দেব।’ 27 সেই দাসের মনিব তাঁকে দয়া করে তার ঋণ মকুব করলেন ও তাকে চলে যেতে দিলেন।
28 “কিন্তু সেই দাস বাইরে গিয়ে তার এক সহদাসকে দেখতে পেল। সে তার কাছে মাত্র একশো দিনার*মাত্র কয়েকশো টাকা। ঋণ করেছিল। সে তাকে ধরে তার গলা টিপে দাবি করল, ‘আমার কাছে যে ঋণ করেছিস তা শোধ কর।’
29 “তার সহদাস তার পায়ে পড়ে মিনতি করল, ‘আমার প্রতি ধৈর্য ধরুন, আমি আপনার ঋণ শোধ করে দেব!’
30 “সে কিন্তু শুনতে চাইল না। পরিবর্তে, সে চলে গিয়ে ঋণ শোধ না করা পর্যন্ত তাকে কারাগারে বন্দি করে রাখল। 31 অন্য সব সহদাস যখন এসব ঘটতে দেখল, তারা অত্যন্ত রেগে গিয়ে তাদের মনিবকে যা ঘটেছিল সব বলল।
32 “তখন মনিব সেই দাসকে ভিতরে ডাকলেন। তিনি বললেন, ‘দুষ্ট দাস তুমি, আমার কাছে তুমি মিনতি করায় আমি তোমার সব ঋণ মকুব করেছিলাম। 33 আমি যেমন তোমাকে দয়া করেছিলাম, তোমারও কি উচিত ছিল না তোমার সহদাসকে দয়া করা?’ 34 ক্রুদ্ধ হয়ে তার মনিব তাকে কারাধ্যক্ষদের হাতে নিপীড়িত হওয়ার জন্য সমর্পণ করলেন, যতদিন না পর্যন্ত সে তার সমস্ত ঋণ শোধ করে।
35 “তোমরা যদি প্রত্যেকে তোমাদের ভাইকে মনেপ্রাণে ক্ষমা না করো, তাহলে আমার স্বর্গস্থ পিতাও তোমাদের প্রতি এরকমই আচরণ করবেন।”
<- মথি 17মথি 19 ->