Link to home pageLanguagesLink to all Bible versions on this site

1 পরে ইলীহূ বললেন:

2 “হে জ্ঞানীগুণীরা, আমার কথা শুনুন;
হে পণ্ডিত ব্যক্তিরা, আমার কথায় কর্ণপাত করুন।
3 জিভ যেভাবে খাদ্যের স্বাদ যাচাই করে
কানও সেভাবে কথার পরীক্ষা করে।
4 আসুন, যা ন্যায্য আমরা তা আমাদের জন্য ঠিক করে নিই;
আসুন, যা ভালো আমরা তা একসাথে শিখে নিই।
 
5 “ইয়োব বলছেন, ‘আমি নির্দোষ,
কিন্তু ঈশ্বর আমার প্রতি ন্যায়বিচার করেননি।
6 আমি যদিও ন্যায়বান,
তাও আমাকে মিথ্যাবাদীরূপে গণ্য করা হয়েছে;
আমি যদিও নিরপরাধ,
তাও তাঁর তির এক দুরারোগ্য আঘাত দিয়েছে।’
7 ইয়োবের মতো আর কেউ কি আছেন,
যিনি জলের মতো অবজ্ঞা পান করেন?
8 তিনি দুর্বৃত্তদের সঙ্গ দেন;
তিনি দুর্জনদের সহযোগী হন।
9 কারণ তিনি বলেছেন, ‘ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করে
কোনও লাভ নেই।’
 
10 “তাই হে বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষেরা, আমার কথা শুনুন।
এ হতেই পারে না যে ঈশ্বর অমঙ্গল করবেন,
সর্বশক্তিমান অন্যায় করবেন।
11 মানুষের কর্মের ফলই তিনি প্রত্যেককে দেন;
তাদের আচরণ অনুসারে তাদের যা প্রাপ্য তিনি তাদের তাই দেন।
12 চিন্তাও করা যায় না যে ঈশ্বর অন্যায় করবেন,
সর্বশক্তিমান ন্যায়বিচার বিকৃত করবেন।
13 পৃথিবীর উপরে কে তাঁকে নিযুক্ত করেছে?
সমগ্র জগতের দায়িত্ব কে তাঁর হাতে সঁপে দিয়েছে?
14 যদি তাঁর ইচ্ছা হত
এবং তিনি তাঁর আত্মা ও শ্বাসবায়ু ফিরিয়ে নিতেন,
15 তবে সমগ্র মানবজাতি একসাথে ধ্বংস হয়ে যেত
ও মানবসমাজ ধুলোতে ফিরে যেত।
 
16 “আপনার যদি বোধশক্তি থাকে, তবে শুনুন;
আমি যা বলছি তাতে কর্ণপাত করুন।
17 যে ন্যায়বিচার ঘৃণা করে সে কি শাসন করবে?
আপনি কি ন্যায়পরায়ণ ও পরাক্রমী ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করবেন?
18 তিনিই কি সেই ব্যক্তি নন, যিনি রাজাদের বলেন, ‘তোমরা অপদার্থ,’
ও অভিজাত লোকজনকে বলেন, ‘তোমরা দুষ্ট,’
19 যিনি রাজপুরুষদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখান না
এবং দরিদ্রদের তুলনায় ধনীদের বেশি প্রশ্রয় দেন না,
কারণ তারা সবাই তাঁরই হাতের কর্ম?
20 এক পলকে, মাঝরাতেই তাদের মৃত্যু হয়;
মানুষজন প্রকম্পিত হয় ও তারা মারা যায়;
পরাক্রমীরা মানুষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই অপসারিত হয়।
 
21 “নশ্বর মানুষের পথের প্রতি তাঁর দৃষ্টি আছে;
তিনি তাদের প্রত্যেকটি পদক্ষেপ লক্ষ্য করেন।
22 এমন কোনও গভীর অন্ধকার, গাঢ় ছায়া নেই,
যেখানে দুর্বৃত্তেরা গিয়ে লুকাতে পারে।
23 ঈশ্বরকে আর মানুষের পরীক্ষা করতে হবে না,
যেন বিচারিত হওয়ার জন্য তাদের তাঁর সামনে আসতে হয়।
24 বিনা তদন্তে তিনি পরাক্রমীদের চূর্ণবিচূর্ণ করেন
ও তাদের স্থানে তিনি অন্যদের নিযুক্ত করেন।
25 কারণ তিনি তাদের কাজকর্ম লক্ষ্য করেন,
রাতারাতি তিনি তাদের উৎখাত করেন ও তারা চূর্ণ হয়।
26 তাদের দুষ্টতার জন্য তিনি এমন এক স্থানে তাদের দণ্ড দেন
যেখানে সবাই তাদের দেখতে পায়,
27 কারণ তারা তাঁর অনুগমন করা থেকে ফিরে গিয়েছে
ও তাঁর কোনো পথের প্রতি তাদের মনে কোনো কদর নেই।
28 তাদের কারণে দরিদ্রদের আর্তনাদ তাঁর কাছে পৌঁছেছে,
ও অভাবগ্রস্তদের কান্না তিনি শুনে ফেলেছেন।
29 কিন্তু তিনি যদি নীরব থাকেন, কে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করবে?
তিনি যদি তাঁর মুখ ঢেকে রাখেন, কে তাঁকে দেখতে পাবে?
তবুও তিনি ব্যক্তিবিশেষ ও জাতি উভয়ের উপরেই বিরাজমান,
30 যেন অধার্মিকেরা শাসন করতে না পারে,
ও প্রজাদের জন্য ফাঁদ বিছাতে না পারে।
 
31 “ধরুন কেউ ঈশ্বরকে বলছে,
‘আমি দোষী কিন্তু আমি আর অপরাধ করব না।
32 আমি যা দেখতে পাই না তা আমাকে শিক্ষা দাও;
আমি যদি অন্যায় করে থাকি, তবে আমি আর তা করব না।’
33 যখন আপনি অনুতাপ করতে রাজি হচ্ছেন না
তখন ঈশ্বর কি আপনার শর্তে আপনাকে পুরস্কৃত করবেন?
আমাকে নয়, আপনাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে;
তাই বলুন আপনি কী জানেন।
 
34 “বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষেরা ঘোষণা করবেন,
যারা আমার কথা শুনেছেন সেই জ্ঞানবানেরা আমায় বলবেন,
35 ‘ইয়োব অজ্ঞের মতো কথা বলছেন;
তাঁর কথায় অন্তর্দৃষ্টির অভাব আছে।’
36 ওহো, একজন দুষ্টলোকের মতো উত্তর দেওয়ার জন্য
যদি ইয়োবের চরম পরীক্ষা নেওয়া যেত!
37 তাঁর পাপে তিনি বিদ্রোহও যোগ করেছেন;
ঘৃণাপূর্ণভাবে তিনি আমাদের মধ্যে হাততালি দিয়েছেন
ও ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অনেক কথা বলেছেন।”

<- ইয়োব 33ইয়োব 35 ->