4 কিন্তু শমরিয়ার মধ্য দিয়ে তাঁকে যেতে হয়েছিল। 5 যেতে যেতে তিনি শমরিয়ার শুখর নামক একটি গ্রামে এসে উপস্থিত হলেন। যাকোব তাঁর পুত্র যোষেফকে যে জমি দান করেছিলেন, সেই স্থানটি তারই নিকটবর্তী। 6 সেই স্থানে যাকোবের কুয়ো ছিল। পথশ্রান্ত যীশু কুয়োর পাশে বসলেন। তখন প্রায় দুপুরবেলা।*অর্থাৎ, দুপুর বারোটা।
7 এক শমরীয় নারী জল তুলতে এলে, যীশু তাকে বললেন, “আমাকে একটু জল খেতে করতে দেবে?” 8 (তাঁর শিষ্যেরা তখন খাবার কিনতে নগরে গিয়েছিলেন।)
9 শমরীয় নারী তাঁকে বলল, “আপনি একজন ইহুদি, আর আমি এক শমরীয় নারী। আপনি কী করে আমার কাছে খাওয়ার জন্য জল চাইছেন?” (কারণ ইহুদিদের সঙ্গে শমরীয়দের সামাজিক সম্পর্ক ছিল না।†ইহুদিরা শমরীয়দের ব্যবহৃত পাত্র ব্যবহার করত না।)
10 উত্তরে যীশু তাকে বললেন, “তুমি যদি ঈশ্বরের দানের কথা জানতে, আর জানতে, কে তোমার কাছে খাওয়ার জন্য জল চাইছেন, তাহলে তুমিই তাঁর কাছে চাইতে আর তিনি তোমাকে জীবন্ত জল দিতেন।”
11 সেই নারী তাঁকে বলল, “মহাশয়, আপনার কাছে জল তোলার কোনো পাত্র নেই, কুয়োটিও গভীর। এই জীবন্ত জল আপনি কোথায় পাবেন? 12 আমাদের পিতৃপুরুষ যাকোবের চেয়েও কি আপনি মহান? তিনি আমাদের এই কুয়ো দান করেছিলেন। তিনি নিজেও এর থেকে জল খেতেন, আর তার পুত্রেরা ও তার পশুপাল এই জলই খেতো।”
13 যীশু উত্তর দিলেন, “যে এই জল খাবে, সে আবার তৃষ্ণার্ত হবে, 14 কিন্তু আমি যে জল দান করি, তা যে খাবে, সে কোনোদিনই তৃষ্ণার্ত হবে না। প্রকৃতপক্ষে, আমার দেওয়া জল তার অন্তরে এক জলের উৎসে পরিণত হবে, যা অনন্ত জীবন পর্যন্ত উথলে উঠবে।”
15 সেই নারী তাঁকে বলল, “মহাশয়, আমাকে সেই জল দিন, যেন আমার পিপাসা না পায় এবং জল তোলার জন্য আমাকে এখানে আর আসতে না হয়।”
16 তিনি তাকে বললেন, “যাও, তোমার স্বামীকে ডেকে নিয়ে এসো।”
17 সে উত্তর দিল, “আমার স্বামী নেই।”
19 সেই নারী বলল, “মহাশয়, আমি দেখছি, আপনি একজন ভাববাদী। 20 আমাদের পূর্বপুরুষেরা এই পর্বতে উপাসনা করতেন, কিন্তু আপনারা, যাঁরা ইহুদি, দাবি করেন যে, জেরুশালেমেই আমাদের উপাসনা করতে হবে।”
21 যীশু তাকে বললেন, “নারী, আমার কথায় বিশ্বাস করো, এমন সময় আসছে যখন তোমরা এই পর্বতে অথবা জেরুশালেমে পিতার উপাসনা করবে না। 22 তোমরা শমরীয়েরা জানো না, তোমরা কী উপাসনা করছ; আমরা জানি, আমরা কী উপাসনা করি, কারণ ইহুদিদের মধ্য থেকেই পরিত্রাণ উপলব্ধ হবে। 23 কিন্তু এখন সময় আসছে বরং এসে পড়েছে, যখন প্রকৃত উপাসকেরা আত্মায় ও সত্যে পিতার উপাসনা করবে, কারণ পিতা এরকম উপাসকদেরই খোঁজ করেন। 24 ঈশ্বর আত্মা, তাই যারা তাঁর উপাসনা করে, তাদেরকে আত্মায় ও সত্যে উপাসনা করতে হবে।”
25 তখন সেই নারী তাঁকে বলল, “আমি জানি মশীহ” (যাঁকে খ্রীষ্ট বলা হয়), “আসছেন। তিনি এসে আমাদের কাছে সবকিছু ব্যাখ্যা করবেন।”
26 যীশু তাকে বললেন, “তোমার সঙ্গে কথা বলছি যে আমি, আমিই সেই খ্রীষ্ট।”
28 তখন জলের পাত্র ফেলে রেখে সেই নারী নগরে ফিরে গিয়ে লোকদের বলল, 29 “একজন মানুষকে দেখবে এসো। আমি এতদিন যা করেছি, তিনি সবকিছু বলে দিয়েছেন। তিনিই কি সেই খ্রীষ্ট নন?” 30 নগর থেকে বেরিয়ে তারা যীশুর কাছে আসতে লাগল।
31 এই অবসরে তাঁর শিষ্যেরা তাঁকে মিনতি করলেন, “রব্বি, কিছু খেয়ে নিন।”
32 কিন্তু তিনি তাঁদের বললেন, “আমার এমন খাবার আছে, যার কথা তোমরা কিছুই জানো না।”
33 তাঁর শিষ্যেরা তখন পরস্পর বলাবলি করলেন, “কেউ কি তাঁকে কিছু খাবার এনে দিয়েছে?”
34 যীশু বললেন, “যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁর ইচ্ছা পালন করা ও তাঁর কাজ শেষ করাই আমার খাবার। 35 তোমরা কি বলো না, ‘আর চার মাস পরেই ফসল কাটার সময় আসবে?’ আমি তোমাদের বলছি, তোমরা চোখ মেলে মাঠের দিকে তাকিয়ে দেখো। ফসল কাটার উপযুক্ত হয়ে উঠেছে। 36 এমনকি, যে ফসল কাটছে, সে এখনই তার পারিশ্রমিক পাচ্ছে এবং এখনই সে অনন্ত জীবনের ফসল সংগ্রহ করছে, যেন যে কাটছে, আর যে বুনছে—দুজনেই উল্লসিত হতে পারে। 37 তাই ‘একজন বোনে, অপরজন কাটে,’ এই কথাটি সত্য। 38 আমি তোমাদের এমন ফসল সংগ্রহ করতে পাঠিয়েছি, যার জন্য তোমরা পরিশ্রম করোনি। অন্যেরা কঠোর পরিশ্রম করেছে, আর তোমরা তাদের শ্রমের ফসল সংগ্রহ করেছ।”
42 তারা সেই নারীকে বলল, “শুধু তোমার কথা শুনে এখন আর আমরা বিশ্বাস করছি না, আমরা এখন নিজেরা শুনেছি এবং আমরা জানি যে, এই ব্যক্তিই প্রকৃতপক্ষে জগতের উদ্ধারকর্তা।”
46 গালীলের যে কানা নগরে তিনি জলকে দ্রাক্ষারসে রূপান্তরিত করেছিলেন, তিনি আর একবার সেখানে গেলেন। সেখানে এক উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারী ছিলেন, যাঁর পুত্র কফরনাহূমে অসুস্থ ছিল। 47 তিনি যখন শুনতে পেলেন, যীশু যিহূদিয়া থেকে গালীলে এসেছেন, তিনি যীশুর কাছে গিয়ে অনুনয় করলেন, যেন তিনি এসে তার মৃতপ্রায় পুত্রকে সুস্থ করেন।
48 যীশু তাকে বললেন, “তোমরা চিহ্ন ও বিস্ময়কর কিছু না দেখলে কি কখনোই বিশ্বাস করবে না।”
49 রাজকর্মচারী বললেন, “মহাশয়, আমার ছেলেটির মৃত্যুর পূর্বে আসুন।”
50 যীশু উত্তর দিলেন, “যাও, তোমার ছেলে বেঁচে থাকবে।”
53 বালকটির পিতা তখন বুঝতে পারলেন, ঠিক ওই সময়েই যীশু তাকে বলেছিলেন, “তোমার ছেলে বেঁচে থাকবে।” এর ফলে তিনি ও তার সমস্ত পরিজন বিশ্বাস করলেন।
54 যিহূদিয়া থেকে গালীলে আগমনের পর যীশু এই দ্বিতীয় চিহ্নকাজটি সম্পন্ন করলেন।
<- যোহন 3যোহন 5 ->