65
বিচার ও উদ্ধার
1 “যারা আমাকে চায়নি, আমি তাদের কাছে নিজেকে প্রকাশ করেছি;
যারা আমার অন্বেষণ করেনি, তারা আমাকে খুঁজে পেয়েছে।
যে জাতি আমার নামে ডাকেনি, তাদের আমি বলেছি, ‘এই আমি, এই যে আমি এখানে।’
2 সমস্ত দিন, আমি এক বিদ্রোহী প্রজাবৃন্দের উদ্দেশে
আমার দু-হাত বাড়িয়ে রেখেছিলাম,
তারা এমন সব জীবনযাপন করে, যা ভালো নয়,
তারা নিজেদের কল্পনা অনুযায়ী কাজ করে।
3 তারা এমন এক জাতি, যারা আমার মুখের উপরেই
নিত্য আমাকে প্ররোচিত করে,
বিভিন্ন উদ্যানের মধ্যে বলি দেয়
ও ইটের তৈরি বেদির উপরে ধূপদাহ করে;
4 তারা কবরের স্থানগুলিতে বসে
গুপ্ত স্থানে রাত জেগে কাটায়;
তারা শূকরের মাংস ভোজন করে
ও তাদের পাত্রে অশুচি মাংসের ঝোল থাকে।
5 তারা বলে, ‘দূরে থাকো; আমার কাছে এসো না,
কারণ আমি তোমাদের চেয়ে বেশি পবিত্র!’
এই লোকেরা আমার নাকের কাছে ধোঁয়ার মতো,
সমস্ত দিন তারা যেন প্রজ্বলিত আগুন।
6 “দেখো, এ আমার সামনে লিখিত আছে:
আমি নীরব থাকব না, কিন্তু পূর্ণ প্রতিফল দেব;
আমি তাদের কোলেই তা ফিরিয়ে দেব—
7 তোমাদের পাপ ও তোমাদের পিতৃপুরুষদের কৃত যত পাপ,”
সদাপ্রভু এই কথা বলেন।
“যেহেতু তারা পর্বতে পর্বতে ধূপ জ্বালিয়েছে
এবং পাহাড়গুলির উপরে আমাকে অপমান করেছে,
আমি তাদের পূর্বেকার কৃতকর্ম অনুযায়ী
পূর্ণমাত্রায় তাদের প্রতিশোধ দেব।”
8 সদাপ্রভু এই কথা বলেন,
“যেমন দ্রাক্ষাফলের গুচ্ছে রস পূর্ণ দেখে,
লোকেরা বলে, ‘এটি নষ্ট কোরো না,
কারণ এতে এখনও আশীর্বাদ আছে,’
তেমনই আমি আমার দাসদের পক্ষে করব;
আমি তাদের সবাইকে ধ্বংস করব না।
9 আমি যাকোবের কুল থেকে এক বংশের,
এবং যিহূদা থেকে আমার পর্বতগুলির এক উত্তরাধিকারীকে তুলে ধরব;
আমার মনোনীত প্রজারা তা অধিকার করবে,
সেখানে আমার দাসেরা বসবাস করবে।
10 আমার অন্বেষী প্রজাদের জন্য,
শারোণ মেষপালের এক চারণভূমি হবে,
আর আখোর উপত্যকা হবে পশুপালের এক বিশ্রামস্থান।
11 “কিন্তু তোমরা যারা সদাপ্রভুকে পরিত্যাগ করো,
ও আমার পবিত্র পর্বতকে ভুলে যাও,
যারা ভাগ্যদেবের জন্য মেজ সাজাও
ও নিয়তিদেবের উদ্দেশে মিশ্রিত সুরার পাত্র পূর্ণ করো,
12 আমি তাদের জন্য তরোয়াল নিরূপণ করব,
তখন তোমরা ঘাতকদের কাছে মাথা নিচু করবে;
কারণ আমি ডাকলে তোমরা উত্তর দিতে না,
আমি কথা বললে তোমরা শুনতে না।
তোমরা আমার দৃষ্টিতে অন্যায় করেছ,
যা আমাকে অসন্তুষ্ট করে, তোমরা তাই করেছ।”
13 সেই কারণে, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন,
“আমার দাসেরা ভোজন করবে,
কিন্তু তোমরা ক্ষুধার্ত থাকবে;
আমার দাসেরা পান করবে,
কিন্তু তোমরা তৃষ্ণার্ত থাকবে;
আমার দাসেরা আনন্দ করবে,
কিন্তু তোমরা লজ্জিত হবে।
14 আমার দাসেরা গান গাইবে
তাদের মনের আনন্দে,
কিন্তু তোমাদের মনস্তাপের জন্য
তোমরা কাঁদতে থাকবে
ও ভগ্ন আত্মার জ্বালায় হাহাকার করবে।
15 তোমরা আমার মনোনীত লোকদের মাঝে
তোমাদের নাম অভিশাপরূপে রেখে যাবে;
সার্বভৌম সদাপ্রভু তোমাদের মৃত্যুতে সমর্পণ করবেন,
কিন্তু তাঁর দাসেদের তিনি অন্য এক নাম দেবেন।
16 কেউ যদি দেশে কোনো আশীর্বাদের জন্য মিনতি করে,
সে সত্যময় ঈশ্বরের নামেই তা করবে;
যে দেশে কোনো শপথ গ্রহণ করে,
সে সত্যময় ঈশ্বরের নামেই তা করবে।
কারণ অতীতের সব দুঃখকষ্ট বিস্মৃত হবে,
আমার চোখ থেকে তা গুপ্ত থাকবে।
নতুন আকাশমণ্ডল ও এক নতুন পৃথিবী
17 “দেখো, আমি নতুন আকাশমণ্ডল
ও এক নতুন পৃথিবী সৃষ্টি করি।
পূর্বের বিষয়গুলি আর স্মরণ করা হবে না,
সেগুলি আর মনেও আসবে না।
18 কিন্তু আমি যা সৃষ্টি করব, তার জন্য
আনন্দিত ও চিরকালের জন্য উল্লসিত হও,
কারণ আমি জেরুশালেমকে হর্ষের জন্য
ও তার লোকেদের আনন্দের জন্য সৃষ্টি করব।
19 আমি জেরুশালেমের জন্য উল্লসিত হব
ও আমার প্রজাদের জন্য হর্ষিত হব;
ক্রন্দন কিংবা বিলাপের ধ্বনি
আর কখনও সেখানে শোনা যাবে না।
20 “আর কখনও তার মধ্যে
কোনো শিশু কিছুকাল বেঁচে থেকে
কিংবা কোনো বৃদ্ধ পূর্ণবয়স্ক না হয়ে মারা যাবে না;
যে একশো বছর বয়সে মারা যায়,
তাকে নিতান্তই যুবক বলা হবে;
আর যে পাপীর একশো বছর পরমায়ু হয় না,
সে অভিশপ্ত বিবেচিত হবে।
21 তারা ঘরবাড়ি নির্মাণ করে সেগুলির মধ্যে বসবাস করবে;
তারা দ্রাক্ষাকুঞ্জ রোপণ করে তার ফল ভক্ষণ করবে।
22 তারা গৃহ নির্মাণ করলে, আর কখনও তার মধ্যে অন্য কেউ বাস করবে না,
বা বৃক্ষরোপণ করলে, অন্য কেউ তার ফল খাবে না।
কারণ কোনো বৃক্ষের আয়ুর মতোই
আমার প্রজাদের পরমায়ু হবে;
আমার মনোনীত লোকেরা দীর্ঘদিন
তাদের হস্তকৃত কর্মফল উপভোগ করবে।
23 তারা বৃথা পরিশ্রম করবে না,
বা দুর্ভাগ্যের জন্য সন্তানদের জন্ম দেবে না;
কারণ তারা এবং তাদের বংশধরেরা
সদাপ্রভুর আশীর্বাদধন্য এক জাতি হবে।
24 তারা ডাকবার আগেই আমি উত্তর দেব;
তারা কথা বলতে না বলতেই আমি তা শুনব।
25 নেকড়েবাঘ ও মেষশাবক একসঙ্গে চরে বেড়াবে,
সিংহ বলদের মতোই বিচালি খাবে
এবং ধুলোই হবে সাপের খাবার।
আমার পবিত্র পর্বতের কোনো স্থানে
তারা কোনো ক্ষতি বা ধ্বংস করতে পারবে না,”