59
পাপ, স্বীকারোক্তি এবং মুক্তি
1 নিশ্চয়ই সদাপ্রভুর হাত এত ছোটো নয়, যে তিনি ত্রাণ করতে পারেন না,
বা তাঁর কান এমন বধির নয়, যে তিনি শুনতে পান না।
2 কিন্তু তোমাদের অপরাধগুলিই তোমাদের পৃথক করেছে
তোমাদের ঈশ্বর থেকে;
তোমাদের পাপগুলি তোমাদের কাছ থেকে তাঁর শ্রীমুখকে লুকিয়েছে,
তাই তিনি শোনেন না।
3 কারণ তোমাদের হাতগুলি রক্তে ও
তোমাদের আঙুলগুলি অপরাধে কলুষিত হয়েছে।
তোমাদের মুখ মিথ্যা কথা বলেছে,
আর তোমাদের জিভ কেবলই দুষ্টতার কথা বলে।
4 কেউ ন্যায্য বিচারের আহ্বান করে না;
কেউই তার মামলা সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে উপস্থাপিত করে না।
তারা অসার তর্কযুক্তিতে নির্ভর করে এবং মিথ্যা কথা বলে;
তারা সমস্যা গর্ভে ধারণ করে মন্দতার জন্ম দেয়।
5 তারা কালসাপের ডিম ফোটায়
এবং মাকড়সার জাল বোনে।
কেউ যদি তাদের ডিম খায়, সে মারা যাবে,
সেই ডিম যখন ফোটে, বিষাক্ত সাপ বের হয়।
6 তাদের জালের সুতোয় পোশাক তৈরি হয় না;
তাদের তৈরি পোশাকে তারা নিজেদের আবৃত করতে পারে না।
তাদের সমস্ত কাজ মন্দ,
তাদের হাতে রয়েছে সমস্ত হিংস্রতার কাজ।
7 তাদের পাগুলি পাপের পথে দৌড়ায়;
নির্দোষের রক্তপাত করার জন্য তারা দ্রুত ছুটে যায়।
তাদের সমস্ত চিন্তাধারা কেবলই মন্দ;
তাদের পথে পথে রয়েছে ধ্বংস ও বিনাশ।
8 তারা শান্তির পথ জানে না;
তাদের পথে কোনো ন্যায়বিচার নেই।
তারা নিজেদের আঁকাবাঁকা পথে ফিরিয়েছে;
সেই পথ যে অতিক্রম করে, সে শান্তির সন্ধান পায় না।
9 তাই ন্যায়বিচার আমাদের কাছ থেকে দূরে থাকে,
ধার্মিকতা আমাদের কাছে পৌঁছায় না।
আমরা আলোর অপেক্ষা করি, কিন্তু সবই অন্ধকার
অপেক্ষা করি উজ্জ্বলতার, কিন্তু গহন ছায়ায় পথ চলি।
10 দৃষ্টিহীনের মতো আমরা দেওয়াল ধরে পথ হাঁতড়াই,
চক্ষুহীন মানুষের মতোই আমরা পথ অনুমান করি।
মধ্যাহ্নেই সন্ধ্যা হয়েছে ভেবে আমরা হোঁচট খাই,
শক্তিশালী লোকেদের মাঝে, আমরা যেন মৃত মানুষ।
11 আমরা সবাই ভালুকের মতো গর্জন করি;
ঘুঘুর মতোই আমরা করুণ আর্তস্বর করি।
আমরা ন্যায়বিচারের অপেক্ষা করি, কিন্তু পাই না;
মুক্তির প্রতীক্ষায় থাকি, কিন্তু তা দূরে থাকে।
12 কারণ তোমার দৃষ্টিতে আমাদের অপরাধ প্রচুর,
আমাদের পাপগুলি আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়।
আমাদের অপরাধগুলি আমাদের নিত্যসঙ্গী,
আমরা আমাদের সব অধর্ম স্বীকার করি:
13 সেগুলি হল: সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও বিশ্বাসঘাতকতা,
আমাদের ঈশ্বরের প্রতি পিঠ প্রদর্শন,
অত্যাচার ও বিপ্লব করার জন্য প্ররোচিত করা,
আমাদের হৃদয়ে সঞ্চিত মিথ্যা কথা উগরে দেওয়া।
14 তাই ন্যায়বিচার পিছু হটে যায়,
ধার্মিকতা দূরে দাঁড়িয়ে থাকে;
সত্য পথে পথে হোঁচট খেয়েছে,
সততা প্রবেশ করতেই পারে না।
15 সত্যের সন্ধান কোথাও পাওয়া যায় না,
আর কেউ যদি মন্দতাকে ত্যাগ করে, সে অত্যাচারের শিকার হয়ে যায়।
সেখানে ন্যায়বিচার নেই লক্ষ্য করে
সদাপ্রভু অসন্তুষ্ট হলেন।
16 তিনি দেখলেন, সেখানে একজনও নেই,
অবাক হলেন দেখে যে, মধ্যস্থতা করার জন্য একজনও নেই;
তাই তাঁর নিজেরই বাহু তাঁর হয়ে মুক্তিসাধন করল,
তাঁর নিজের ধার্মিকতা তাঁকে তুলে ধরল।
17 তিনি ধার্মিকতাকে তার বুকপাটারূপে
ও মাথার উপরে পরিত্রাণকে শিরস্ত্রাণরূপে পরিধান করলেন;
তিনি প্রতিশোধ গ্রহণের সব পোশাক পরে নিলেন,
পরিচ্ছদরূপে গায়ে জড়িয়ে নিলেন উদ্যোগ।
18 তারা যে রকম কাজ করেছে,
সেইরকমভাবেই তিনি তাদের প্রতিশোধ দেবেন,
শত্রুদের প্রতি ক্রোধ
ও বিপক্ষদের প্রতি তাঁর দণ্ড;
দ্বীপনিবাসীদের কাছে তিনি তাদের প্রাপ্য দেবেন।
19 পশ্চিমদিক থেকে, লোকেরা সদাপ্রভুর নামকে ভয় করবে,
সূর্যোদয়ের দিক থেকে, তারা তাঁর মহিমাকে সম্ভ্রম করবে।
কারণ তিনি বাঁধ ভাঙা বন্যার মতো আসবেন,
যা সদাপ্রভুর নিশ্বাসে প্রবাহিত হবে।
20 “যাকোব কুলে যারা তাদের পাপসমূহের জন্য অনুতপ্ত হবে,
মুক্তিদাতা তাদের কাছে সিয়োন থেকে আসবেন,”
সদাপ্রভু এই কথা ঘোষণা করেন।
21 “আমার দিক থেকে, এ হল তাদের সঙ্গে কৃত আমার নিয়ম,” সদাপ্রভু এই কথা বলেন। “আমার আত্মা, যা তোমার উপরে আছে এবং আমার বাক্য, যা আমি তোমার মুখে দিয়েছি, তা তোমার মুখ থেকে বা তোমার ছেলেমেয়েদের মুখ থেকে, এবং তাদের বংশধরদের মুখ থেকে, এখন থেকে চিরকাল পর্যন্ত, কখনও দূর করা যাবে না,” সদাপ্রভু এই কথা বলেন।
<- যিশাইয় 58যিশাইয় 60 ->