4 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের সামনে থেকে তাদের তাড়িয়ে দেওয়ার পর, তোমরা কেউ মনে মনে বোলো না, “আমার ধার্মিকতার জন্য সদাপ্রভু আমাকে এই দেশ অধিকার করাতে এখানে নিয়ে এসেছেন।” তা নয়, এসব জাতির লোকদের দুষ্টতার জন্যই সদাপ্রভু তোমাদের সামনে থেকে তাদের তাড়িয়ে দিতে যাচ্ছেন। 5 তোমাদের ধার্মিকতা কিংবা সাধুতার জন্য তোমরা যে তাদের দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ তা নয়; কিন্তু এই জাতিদের দুষ্টতার জন্য, বরং তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষ অব্রাহাম, ইস্হাক ও যাকোবের কাছে যে কথা প্রতিজ্ঞা করে বলেছিলেন তা পূরণ করবার জন্যই তিনি এসব জাতির দুষ্টতার দরুন তোমাদের সামনে থেকে তাদের তাড়িয়ে দেবেন। 6 কাজেই তোমরা জেনে রেখো, তোমাদের ধার্মিকতার জন্য যে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই চমৎকার দেশটি তোমাদের অধিকার করতে দিচ্ছেন তা নয়, কারণ তোমরা তো একগুঁয়ে এক জাতি।
11 সেই চল্লিশ দিন আর চল্লিশ রাত কেটে যাওয়ার পর সদাপ্রভু ওই বিধান লেখা পাথরের ফলক দুটি আমাকে দিয়েছিলেন। 12 তারপর সদাপ্রভু আমাকে বললেন, “তুমি এখনই নিচে নেমে যাও, কেননা যে লোকদের তুমি মিশর থেকে বের করে এনেছ তারা কুপথে গেছে। যে পথে চলবার আদেশ আমি দিয়েছিলাম এর মধ্যেই তারা তা থেকে দূরে সরে গেছে এবং পূজার জন্য নিজেদের জন্য একটি মূর্তি তৈরি করেছে।”
13 আর সদাপ্রভু আমাকে বললেন, “আমি এই লোকদের দেখেছি, এরা একগুঁয়ে এক জাতি! 14 তুমি আমাকে বাধা দিয়ো না, যেন আমি তাদের ধ্বংস করি এবং পৃথিবী থেকে তাদের নাম মুছে ফেলি। আর আমি তোমার মধ্য দিয়ে আরও শক্তিশালী এবং তাদের চেয়ে আরও বড়ো একটি জাতি তৈরি করব।”
15 তখন আমি পাহাড় থেকে নেমে আসলাম যখন পাহাড় আগুনে জ্বলছিল। আর আমার হাতে বিধানের দুটি ফলক ছিল। 16 আমি চেয়ে দেখলাম, তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করেছ; পূজার জন্য তোমরা ছাঁচে ফেলে একটি বাছুরের মূর্তি তৈরি করে নিয়েছ। সদাপ্রভু তোমাদের যে পথে চলবার আদেশ দিয়েছিলেন তোমরা ঐটুকু সময়ের মধ্যেই সেই পথ থেকে সরে গিয়েছিলে। 17 সেইজন্য আমি পাথরের ফলক দুটি আমার হাত থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিলাম, তাতে সেগুলি তোমাদের চোখের সামনে টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছিল।
18 সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে মন্দ এমন সব পাপ তোমরা করে তাঁর ক্রোধ জাগিয়ে তুলেছিলে সেইজন্য আমি আগের বারের মতো আবার চল্লিশ দিন ও চল্লিশ রাত সদাপ্রভুর সামনে উপুড় হয়ে পড়েছিলাম; জল বা রুটি কিছুই খাইনি। 19 সদাপ্রভুর ভীষণ অসন্তোষকে আমি ভয় করেছিলাম, কারণ তোমাদের ধ্বংস করে ফেলবার মতো ক্রোধ তাঁর হয়েছিল। কিন্তু এবারও সদাপ্রভু আমার কথা শুনেছিলেন। 20 আর হারোণকে ধ্বংস করে ফেলবার মতো ক্রোধও তাঁর হয়েছিল, কিন্তু সেই সময় আমি হারোণের জন্যও মিনতি করেছিলাম। 21 আর আমি তোমাদের সেই পাপময় জিনিসটি, তোমাদের তৈরি সেই বাছুরটি, নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছিলাম। তারপর আমি সেটি ধুলোর মতো গুঁড়ো করে পাহাড় থেকে বয়ে আসা নদীর স্রোতে ফেলে দিয়েছিলাম।
22 তোমরা তবেরাতে, মঃসাতে ও কিব্রোৎ-হত্তাবাতে সদাপ্রভুর ক্রোধ জাগিয়ে তুলেছিলে।
23 তারপর সদাপ্রভু তোমাদের কাদেশ-বর্ণেয় থেকে রওনা করে দেওয়ার সময় বলেছিলেন, “তোমরা উঠে যাও এবং যে দেশ আমি তোমাদের দিয়েছি তা অধিকার করো।” কিন্তু তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আজ্ঞার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলে। তোমরা তাঁকে বিশ্বাস করোনি বা তাঁর বাধ্য হওনি। 24 আমি যখন থেকে তোমাদের জেনেছি তখন থেকেই তোমরা সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে কেবল বিদ্রোহই করে চলেছ।
25 সদাপ্রভু তোমাদের ধ্বংস করার কথা বলেছিলেন বলে আমি সেই চল্লিশ দিন ও চল্লিশ রাত সদাপ্রভুর সামনে উবুড় হয়ে পড়েছিলাম। 26 আমি সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করে বলেছিলাম, “হে সার্বভৌম সদাপ্রভু, তোমার লোকদের তুমি ধ্বংস করে ফেলো না, তারা তো তোমারই উত্তরাধিকারী যাদের তুমি তোমার মহাশক্তি দ্বারা মুক্ত করেছ এবং তোমার শক্তিশালী হাত ব্যবহার করে মিশর দেশ থেকে বের করে এনেছ। 27 তোমার দাস অব্রাহাম, ইস্হাক ও যাকোবকে স্মরণ করো। এই লোকদের একগুঁয়েমি, দুষ্টতা এবং পাপের দিকে চেয়ে দেখো না। 28 তা করলে যে দেশ থেকে তুমি আমাদের বের করে এনেছ সেই দেশের লোকেরা বলবে, ‘সদাপ্রভু তাঁর প্রতিজ্ঞাত দেশে তাদের নিয়ে যেতে পারলেন না বলে এবং তাদের ঘৃণা করেন বলে, তাদের মেরে ফেলার জন্য এই প্রান্তরে নিয়ে এসেছেন।’ 29 কিন্তু তারা তোমার লোক, তোমারই উত্তরাধিকারী যাদের তুমি তোমার হাত বাড়িয়ে দিয়ে মহাশক্তিতে বের করে এনেছ।”
<- দ্বিতীয় বিবরণ 8দ্বিতীয় বিবরণ 10 ->