7 জেরুশালেমের পূর্বদিকে অবস্থিত একটি পাহাড়ে শলোমন মোয়াবের ঘৃণ্য দেবতা কমোশের ও অম্মোনীয়দের ঘৃণ্য দেবতা মোলকের জন্য উঁচু পূজাবেদি তৈরি করলেন। 8 তিনি তাঁর সেই বিদেশিনী স্ত্রীদের জন্যও এমনটি করে দিলেন, যারা তাদের দেবদেবীদের উদ্দেশে ধূপ পোড়াতো ও বলি উৎসর্গ করত।
9 সদাপ্রভু শলোমনের উপর ক্রুদ্ধ হলেন, কারণ তাঁর অন্তর ইস্রায়েলের সেই ঈশ্বর সদাপ্রভুর দিক থেকে দূরে সরে গেল, যিনি দু-দুবার তাঁকে দর্শন দিলেন। 10 যদিও সদাপ্রভু শলোমনকে অন্যান্য দেবদেবীদের অনুগামী হতে মানা করলেন, তবুও তিনি সদাপ্রভুর আদেশ পালন করেননি। 11 তাই সদাপ্রভু শলোমনকে বললেন, “যেহেতু এই তোমার মনোভাব এবং তুমি আমার আদেশমতো আমার নিয়মকানুন ও আমার বিধিবিধান পালন করোনি, তাই আমি অবশ্যই তোমার হাত থেকে রাজ্যটি ছিনিয়ে নিয়ে সেটি তোমার অধীনস্থ একজনের হাতে তুলে দেব। 12 তবে, তোমার বাবা দাউদের খাতিরে আমি তোমার জীবনকালে এমনটি করব না। আমি তোমার ছেলের হাত থেকে সেটি ছিনিয়ে নেব। 13 তবুও আমি গোটা রাজ্য তার হাত থেকে ছিনিয়ে নেব না, কিন্তু আমার দাস দাউদের খাতিরে ও আমার মনোনীত জেরুশালেমের খাতিরে আমি তাকে একটি বংশ দেব।”
19 ফরৌণ হদদের উপর এত সন্তুষ্ট হলেন যে তিনি নিজের স্ত্রী, রানি তহপনেষের বোনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে দিলেন। 20 তহপনেষের বোন হদদের জন্য এক ছেলেসন্তান জন্ম দিলেন, যার নাম গনুবৎ। তহপনেষ তাকে রাজপ্রাসাদেই বড়ো করে তুলেছিলেন। সেখানে গনুবৎ ফরৌণের আপন ছেলেমেয়েদের সাথেই বসবাস করত।
21 মিশরে থাকতে থাকতেই হদদ শুনতে পেয়েছিলেন যে দাউদ তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে চিরবিশ্রামে শায়িত হয়েছেন এবং সৈন্যদলের সেনাপতি যোয়াবও মারা গিয়েছেন। তখন হদদ ফরৌণকে বললেন, “আমাকে যেতে দিন, আমি যেন আমার নিজের দেশে ফিরে যেতে পারি।”
22 “এখানে তোমার কীসের অভাব হচ্ছে যে তুমি তোমার নিজের দেশে ফিরে যেতে চাইছ?” ফরৌণ জিজ্ঞাসা করলেন।
23 ঈশ্বর শলোমনের বিরুদ্ধে আরও একজন প্রতিদ্বন্দ্বী দাঁড় করিয়েছিলেন। তিনি ইলিয়াদার ছেলে সেই রষোণ, যিনি তাঁর মনিব, সোবার রাজা হদদেষরের কাছ থেকে পালিয়ে গেলেন। 24 দাউদ যখন সোবার সৈন্যদল ধ্বংস করলেন, রষোণ তখন তাঁর চারপাশে একদল লোক জুটিয়ে তাদের নেতা হয়ে গেলেন; তারা দামাস্কাসে গিয়ে সেখানে বসতি স্থাপন করলেন ও সেখানকার নিয়ন্ত্রণভার হাতে তুলে নিয়েছিলেন। 25 শলোমন যতদিন বেঁচেছিলেন, হদদের দ্বারা উৎপন্ন অসুবিধার পাশাপাশি রষোণও ইস্রায়েলের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েই ছিলেন। অতএব রষোণ অরামে রাজত্ব করছিলেন ও তিনি ইস্রায়েলের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন ছিলেন।
27 তিনি কীভাবে রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হলেন, তার বিবরণ এইরকম: শলোমন কয়েকটি উঁচু চাতাল*অথবা, মিল্লো তৈরি করলেন ও তাঁর বাবা দাউদের নামাঙ্কিত নগরের প্রাচীরের ফাটল সারিয়েছিলেন। 28 ইত্যবসরে যারবিয়াম সামাজিক মর্যাদাসম্পন্ন একজন লোক ছিলেন, এবং শলোমন যখন দেখেছিলেন সেই যুবকটি কত ভালোভাবে তাঁর কাজকর্ম করছিলেন, তখন তিনি তাঁর হাতে যোষেফের বংশভুক্ত সমগ্র মজুরদলের দায়িত্ব সঁপে দিলেন।
29 সেই সময় একদিন যখন যারবিয়াম জেরুশালেমের বাইরে যাচ্ছিলেন, তখন পথে শীলো থেকে আসা ভাববাদী অহিয়র সঙ্গে তাঁর দেখা হল। অহিয়র পরনে ছিল নতুন এক ঢিলা আলখাল্লা। সেই গ্রামাঞ্চলে তারা দুজন একাই ছিলেন, 30 আর অহিয় নিজের পরনে থাকা নতুন আলখাল্লাটি নিয়ে সেটি বারো টুকরো করে ফেলেছিলেন। 31 পরে তিনি যারবিয়ামকে বললেন, “নিজের জন্য তুমি দশটি টুকরো তুলে নাও, কারণ ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু একথাই বলেন: ‘দেখো, আমি শলোমনের হাত থেকে রাজ্যটি ছিনিয়ে নিয়ে তোমাকে দশটি বংশ দিতে যাচ্ছি। 32 কিন্তু আমার দাস দাউদের খাতিরে ও যে জেরুশালেম নগরটি আমি ইস্রায়েলের সব বংশের মধ্যে থেকে মনোনীত করে রেখেছি, সেটির খাতিরে তার হাতে একটি বংশ থাকবে। 33 আমি এরকম করব, কারণ তারা†অথবা, সে; এই পদের শেষ দিকেও আরেকবার তারার স্থানে সে পড়া যেতে পারে আমাকে পরিত্যাগ করেছে এবং সীদোনীয়দের দেবী অষ্টারোতের, মোয়াবীয়দের দেবতা কমোশের ও অম্মোনীয়দের দেবতা মোলকের পূজার্চনা করেছে, তথা আমার প্রতি বাধ্যতা দেখিয়ে চলেনি, বা আমার দৃষ্টিতে যা ভালো তা করেননি, অথবা শলোমনের বাবা দাউদ যেভাবে আমার বিধিবিধান ও নিয়মকানুন পালন করত, তারা সেভাবে তা করেননি।
34 “ ‘কিন্তু আমি শলোমনের হাত থেকে গোটা রাজ্যটি ছিনিয়ে নেব না; যাকে আমি মনোনীত করলাম এবং যে আমার আদেশ ও বিধিবিধান পালন করে গিয়েছে, আমার দাস সেই দাউদের খাতিরেই আমি তাকে সারা জীবনের জন্য শাসনকর্তা করেছি। 35 আমি তার ছেলের হাত থেকে রাজ্যটি ছিনিয়ে নিয়ে তোমাকে দশটি বংশ দেব। 36 আমি তার ছেলেকে একটি বংশ দেব, যেন সেই জেরুশালেমে সবসময় আমার দাস দাউদের এক প্রদীপ জ্বলতে থাকে, যে নগরে আমার নাম বজায় রাখার জন্য আমি সেটি মনোনীত করেছি। 37 অবশ্য, তোমার ক্ষেত্রে আমি বলছি, আমি তোমাকে গ্রহণ করব, ও তোমার মনোবাঞ্ছানুসারে তুমি সবকিছুর উপর শাসন চালাবে; তুমি ইস্রায়েলের উপর রাজা হবে। 38 তুমি যদি আমার দাস দাউদের মতো আমার আদেশানুসারে সবকিছু করো ও আমার প্রতি বাধ্য হয়ে চলো এবং আমার বিধিবিধানের ও আদেশের বাধ্য হয়ে আমার দৃষ্টিতে যা যা ভালো, তাই করো, তবে আমি তোমার সঙ্গে সঙ্গে থাকব। আমি তোমার জন্য এমন এক স্থায়ী রাজবংশ গড়ে তুলব, যেমনটি আমি দাউদের জন্য গড়ে তুলেছিলাম এবং ইস্রায়েলকে আমি তোমার হাতেই তুলে দেব। 39 এই কারণে আমি দাউদের বংশধরদের অবনত করব, কিন্তু চিরকালের জন্য নয়।’ ”
40 শলোমন যারবিয়ামকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু যারবিয়াম মিশরে, রাজা শীশকের কাছে পালিয়ে গেলেন, এবং শলোমনের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত সেখানেই থেকে গেলেন।