Link to home pageLanguagesLink to all Bible versions on this site
24
যিরূশালেমের ধ্বংস ও যীশু আবার ফিরে আসবেন সে বিষয়ে ভাববাণী।
1 পরে যীশু ঈশ্বরের গৃহ থেকে বের হয়ে নিজের রাস্তায় চলেছেন, এমন দিনের তাঁর শিষ্যেরা তাঁকে মন্দিরের গাঁথনিগুলি দেখানোর জন্য কাছে গেলেন। 2 কিন্তু তিনি তাঁদের বললেন, “তোমরা কি এই সব দেখছ না? আমি তোমাদের সত্যি বলছি, এই মন্দিরের একটা পাথর অন্য পাথরের উপরে থাকবে না, সব কিছুই ধ্বংস হবে।” 3 পরে তিনি জৈতুন পর্বতের উপরে বসলে শিষ্যেরা গোপনে তাঁর কাছে এসে বললেন, “আমাদেরকে বলুন দেখি, এই সব ঘটনা কখন ঘটবে? আর আপনার আবার ফিরে আসার এবং যুগ শেষ হওয়ার চিহ্ন কি?” 4 যীশু এর উত্তরে তাঁদের বললেন, “সাবধান হও, কেউ যেন তোমাদের না ঠকায়।” 5 কারণ অনেকেই আমার নাম ধরে আসবে, বলবে, আমিই সেই খ্রীষ্ট, আর অনেক লোককে ঠকাবে। 6 আর তোমরা যুদ্ধের কথাও যুদ্ধের গুজব শুনবে, দেখো, অস্থির হয়ো না, কারণ এসব অবশ্যই ঘটবে, কিন্তু তখনও এর শেষ নয়। 7 কারণ এক জাতি অন্য জাতির বিরুদ্ধে ও এক রাজ্যে অন্য রাজ্যের বিরুদ্ধে উঠবে। জায়গায় জায়গায় ভূমিকম্প ও দূর্ভিক্ষ হবে। 8 কিন্তু এই সবই যন্ত্রণা আরম্ভ মাত্র। 9 সেই দিনের লোকেরা কষ্ট দেবার জন্য তোমাদের সমর্পণ করবে, ও তোমাদের বধ করবে, আর আমার নামের জন্য সমস্ত জাতি তোমাদের ঘৃণা করবে। 10 আর সেই দিন অনেকে বিশ্বাস ছেড়ে চলে যাবে, একজন অন্য জনকে শত্রুর হাতে সমর্পণ করবে, একে অন্যকে ঘৃণা করবে। 11 আর অনেক ভণ্ড ভাববাদী আসবে এবং অনেককে ভোলাবে। 12 আর অধর্ম্ম বৃদ্ধি হওয়াতে অধিকাংশ লোকের প্রেম শীতল হয়ে যাবে। 13 কিন্তু যে কেউ শেষ পর্যন্ত স্থির থাকবে, সে উদ্ধার পাবে। 14 আবার সব জাতির কাছে সাক্ষ্য দাওয়ার জন্য রাজ্যের এই সুসমাচার সমস্ত জগতে প্রচার করা হবে, আর তখন শেষ দিন উপস্থিত হবে। 15 অতএব যখন তোমরা দেখবে, ধ্বংসের যে ঘৃণার জিনিসের বিষয়ে দানিয়েল ভাববাদী বলেছেন, যা পবিত্র স্থানে দাঁড়িয়ে আছে, যে ব্যক্তি এই বিষয়ে পড়ে সে বুঝুক, 16 তখন যারা যিহূদিয়াতে থাকে, তারা পাহাড়ি অঞ্চলে পালিয়ে যাক, 17 যে কেউ ছাদের উপরে থাকে, সে ঘর থেকে জিনিসপত্র নাওয়ার জন্য নীচে না নামুক, 18 আর যে কেউ ক্ষেতে থাকে, সে তার পোশাক নাওয়ার জন্য পেছনে ফিরে না যাক। 19 হায়, সেই দিনের গর্ভবতী এবং যাদের কোলে দুধের বাচ্চা তাদের খুবই কষ্ট হবে! 20 আর প্রার্থনা কর, যেন তোমাদের শীতকালে কিম্বা বিশ্রামবারে পালাতে না হয়। 21 কারণ সেদিন এমন মহাসংকট উপস্থিত হবে, যা জগতের আরম্ভ থেকে এ পর্যন্ত কখনও হয়নি, আর কখনও হবেও না। 22 আর সেই দিনের সংখ্যা যদি কমিয়ে দেওয়া না হত, তবে কোন মানুষই উদ্ধার পেত না, কিন্তু যারা মনোনীত তাদের জন্য সেই দিনের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হবে। 23 তখন যদি কেউ তোমাদের বলে, দেখ, সেই খ্রীষ্ট এখানে, কিম্বা ওখানে, তোমরা বিশ্বাস কর না। 24 কারণ ভণ্ড খ্রীষ্টেরা ও ভণ্ড ভাববাদীরা উঠবে এবং এমন মহান মহান চিহ্ন ও আশ্চর্য্য আশ্চর্য্য কাজ দেখাবে যে, যদি হতে পারে, তবে মনোনীতদেরও ভোলাবে। 25 দেখ, আমি আগেই তোমাদের বললাম। 26 অতএব লোকে যদি তোমাদের বলে, দেখ, তিনি মরূপ্রান্তে, তোমরা বাইরে যেও না, দেখ, তিনি গোপন ঘরে, তোমরা বিশ্বাস করো না। 27 কারণ বিদ্যুৎ যেমন পূর্ব দিক থেকে বের হয়ে পশ্চিম দিক পর্যন্ত প্রকাশ পায়, তেমন ভাবেই মনুষ্যপুত্রের আগমনও হবে। 28 যেখান মৃতদেহ থাকে সেইখানে শকুন জড়ো হবে। 29 আর সেই দিনের সংকটের পরেই সূর্য্য অন্ধকার হবে, চাঁদও জ্যোৎস্না দেবে না, আকাশ থেকে তারা খসে পড়বে ও আকাশমন্ডলের সমস্ত ক্ষমতা। 30 আর তখন মনুষ্যপুত্রের চিহ্ন আকাশে দেখা যাবে, আর তখন পৃথিবীর সমস্ত জাতি বিলাপ করবে এবং মনুষ্যপুত্রকে আকাশে মেঘরথে পরাক্রম ও মহা প্রতাপে আসতে দেখবে। 31 আর তিনি মহা তূরীধ্বনির সঙ্গে তাঁর দূতদের পাঠাবেন, তাঁরা আকাশের এক সীমা থেকে আর এক সীমা পর্যন্ত, চারদিক থেকে তাঁর মনোনীতদের একত্রিত করবেন। 32 ডুমুরগাছের গল্প থেকে শিক্ষা নাও, যখন তার ডালে কচি পাতা বের হয়, তখন তোমরা জানতে পার, গ্রীষ্মকাল এসে গেছে, 33 তেমনি তোমরা ঐ সব ঘটনা দেখলেই জানবে, তিনিও আসছেন, এমনকি, দরজার কাছে উপস্থিত। 34 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, এই যুগের লোকদের লোপ হবে না, যে পর্যন্ত না এ সমস্ত কিছু পূর্ণ হয়। 35 আকাশের ও পৃথিবীর লোপ হবে কিন্তু আমার বাক্যের লোপ কখনও হবে না।
অজানা দিন ও মূহুর্ত।
36 কিন্তু সেই দিনের ও সেই মুহূর্তের বিষয় কেউই জানে না, এমনকি স্বর্গ দূতেরাও জানে না, পুত্রও জানে না, শুধু পিতা জানেন। 37 যেমন নোহের দিনের হয়েছিল, মনুষ্যপুত্রের আগমনও তেমন হবে। 38 কারণ বন্যা আসার আগে থেকে, জাহাজে নোহের প্রবেশের দিন পর্যন্ত, লোকে যেমন খাওয়া দাওয়া করত, বিয়ে করত, ও বিয়ে দিয়েছে। 39 এবং ততক্ষণ বুঝতে পারল না, যতক্ষণ না বন্যা এসে সবাইকে ভাসিয়ে নিয়ে গেল, তেমন মনুষ্যপুত্রের আগমনের দিনের ও হবে। 40 তখন দুই জন ক্ষেতে থাকবে, এক জনকে নিয়ে নাওয়া হবে এবং অন্য জনকে ছেড়ে দেওয়া হবে। 41 দুটি মহিলা যাঁতা পিষবে, এক জনকে নিয়ে যাওয়া হবে এবং অন্য জনকে ছেড়ে দেওয়া হবে। 42 অতএব জেগে থাক, কারণ তোমাদের প্রভু কোন্ দিন আসবেন, তা তোমরা জান না। 43 কিন্তু এটা জেনে রাখো, চোর কোন মুহূর্তে আসবে, তা যদি বাড়ির মালিক জানত, তবে জেগে থাকত, নিজের বাড়িতে সিঁধ কাটতে দিত না। 44 এই জন্য তোমরাও প্রস্তুত থাক, কারণ যে দিন তোমরা মনে করবে তিনি আসবেন না, সেই দিনই মনুষ্যপুত্র আসবেন। 45 এখন, সেই বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাসকে, যাকে তার মালিক তাঁর পরিজনের উপরে নিযুক্ত করেছেন, যেন সে তাদের উপযুক্ত দিনের খাবার দেয়? 46 ধন্য সেই দাস, যাকে তার মালিক এসে তেমন করতে দেখবেন। 47 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তিনি তাকে তাঁর সব কিছুর উপরে নিযুক্ত করবেন। 48 কিন্তু সেই দুষ্টু দাস যদি তার হৃদয়ে বলে, আমার মালিকের আসবার দেরি আছে, 49 আর যদি তার দাসদের মারতে এবং মাতাল লোকদের সঙ্গে খাওয়া দাওয়া করতে, আরম্ভ করে, 50 তবে যে দিন সে অপেক্ষা করবে না এবং যে মুহূর্তের আশা সে করবে না, সেই দিন ও সেই মুহূর্তে সেই দাসের মালিক আসবেন, 51 আর তাকে দুই খন্ড করে ভণ্ডদের মধ্যে তার স্থান ঠিক করবেন, সে সেই জায়গায় কাঁদবে ও দাঁতে দাঁত ঘষবে।

<- মথি 23মথি 25 ->