Link to home pageLanguagesLink to all Bible versions on this site

বিচারকর্ত্তৃগণ
গ্রন্থস্বত্ব
বিচারকতৃগণের বিবরণ কোনো ইঙ্গিত দেয় না যে পুস্তকটি কে লিখেছিলেন, কিন্তু যিহুদী পরম্পরা ভাববাদী শমূয়েলের নাম গ্রন্থকার রূপে স্বীকার করে, বিচারকতৃগণের মধ্যে শমূয়েল ছিলেন সর্বশেষ বিচারক। বিচারকতৃগণের বিবরণের যিনি গ্রন্থকার তিনি নিশ্চিতরূপে রাজতন্ত্রের প্রথম দিন গুলোতে বেঁচে ছিলেন। পুন:পুন:উচ্চারিত বক্তব্য, “তখনকার দিনের ইস্রায়েলে কোনো রাজা ছিল না” (বিচারকতৃগণের বিবরণ 17:6; 18:1; 19:1; 21:25) পুস্তকটির ঘটনাবলী এবং এর রচনার সময় নৈবেদ্যের মধ্যে একটি বিরোধাভাসের ইঙ্গিত দেয়। “বিচারক” শব্দের অর্থ হলো “উদ্ধারক।” প্রয়োজনগতভাবে বিচার করা বিদেশী অত্যাচার থেকে ইস্রায়েলের লোকেদের উদ্ধারকর্তা ছিলেন। কমপক্ষে তাদের মধ্যে কতিপয় আবারও বিরোধ সমূহের শাসক এবং বিচারক ছিলেন।
রচনার সময় এবং স্থান
আনুমাণিক 1403 থেকে 1000 খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যবর্তী সময়।
এটা মনে হয় খুব সম্ভবতঃ বিচারকতৃগণের বিবরণের পুস্তকটি দাউদের রাজত্বের দিনের সংকলিত হয়েছিল, এবং এর মানবীয় উদ্দেশ্য ছিল যিহোশুয়োর মৃত্যুর পর থেকে চলে আসা প্রভাবহীন ব্যবস্থার পরিবর্তে রাজতন্ত্রের সুবিধাগুলোকে দেখানো।
গ্রাহক
ইসরায়েলের লোকেরা এবং বাইবেলের ভবিষ্যত পাঠকগণ।
উদ্দেশ্য
দেশের বিজয় থেকে শুরু করে ইস্রায়েলের প্রথম রাজা পর্যন্ত ঐতিহাসিক দিন কালকে গড়ে তোলা, না কেবলমাত্র বর্তমান ইতিহাসকে উপস্থিত করা যেমন এটা ছিল, বরং বিচারকতৃগণের দিনের র একটি ধর্মতত্তীয় পরিপ্রেক্ষিতকে উপস্থাপন করা (24:14-28; 2:6-13), সদাপ্রভুকে আব্রাহামের প্রতি তাঁর নিয়ম পালনের ক্ষেত্রে বিশ্বস্ত রূপে উপস্থাপন করা, এমনকি যদিও লোকেরা তাঁর সঙ্গে প্রতিষ্ঠিত নিয়মকে ভঙ্গ করেছিল এবং যে তিনি, না বিচারক অথবা না রাজা, ঈশ্বর যদি কাউকে প্রত্যেক প্রজন্মে উত্থিত করেন মন্দতার বিউদ্ধে সংগ্রাম করতে (আদিপুস্তক 3:15) তবে বিচারকদের সংখ্যা প্রজন্মের সংখ্যার সমপরিমাণ হতে পারে।
বিষয়
অধ:পতন এবং উদ্ধার
রূপরেখা
1. বিচারকতৃগণের অধীনে ইস্রায়েল — 1:1-3:6
2. ইস্রায়েলের বিচারকতৃগণ — 3:7-16:31
3. ঘটনাবলী ইস্রায়েলের পাপপূর্ণতাকে প্রদর্শন করছে — 17:1-21:25

1
ইস্রায়েল অবশিষ্ট কনানীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।
1 যিহোশূয়ের মৃত্যুর পরে ইস্রায়েলের লোকেরা সদাপ্রভুর কাছে এই কথা জিজ্ঞাসা করল, “কনানীয়দের বিরুদ্ধে, তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য, প্রথমে আমাদের কে যাবে?” 2 সদাপ্রভু বললেন, “যিহূদা যাবে; দেখ, আমি তার হাতে দেশ সমর্পণ করেছি।” 3 পরে যিহূদা তার ভাই শিমিয়োনকে বলল, “তুমি আমার জায়গায় আমার সঙ্গে এস, আমরা কনানীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করি; পরে আমিও তোমার জায়গায় তোমার সঙ্গে যাব।” তাতে শিমিয়োন তার সঙ্গে গেল। 4 যিহূদা গেলেন, আর সদাপ্রভু তাদের হাতে কনানীয় ও পরিষীয়দেরকে সমর্পণ করলেন; আর তারা বেষকে তাদের দশহাজার লোককে হত্যা করল। 5 তারা বেষকে অদোনী-[a]বেষককে পেয়ে তাঁর সঙ্গে যুদ্ধ করল এবং কনানীয় ও পরিষীয়দেরকে আঘাত করল। 6 তখন অদোনী-বেষক পালিয়ে গেল; আর তারা তার পিছন পিছন দৌড়িয়ে গিয়ে তাঁকে ধরল এবং তাঁর হাত ও পায়ের বুড়ো আঙ্গুল কেটে দিল। 7 তখন অদোনী-বেষক বললেন, “যাদের হাত ও পায়ের বুড়ো আঙ্গুল বাদ দেওয়া হয়েছিল, এমন সত্তর জন রাজা আমার মেজের (টেবিলের) নীচে খাবার কুড়াতেন; আমি যেমন কাজ করেছি, ঈশ্বর আমাকেও সেরকম প্রতিফল দিয়েছেন।” পরে লোকেরা তাকে যিরুশালেমে আনলে তিনি সেই জায়গায় মারা গেলেন। 8 আর যিহূদার লোকেরা যিরুশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তা নিজেদের অধিকারে নিল ও তরোয়াল দিয়ে আঘাত করল এবং আগুন দিয়ে নগর পুড়িয়ে দিল। 9 পরে যিহূদা সন্তানরা কনানীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে নেমে গেল যারা পাহাড়ের দক্ষিণ দিকে এবং পশ্চিমীয় পাদদেশে বাস করত। 10 আর যিহূদা হিব্রোণবাসী কনানীয়দের বিরুদ্ধে যাত্রা করে শেশয়, অহীমান ও তলময়কে আঘাত করল; আগে ঐ হিব্রোণের নাম কিরিয়ৎ সেফর ছিল। 11 সেখান থেকে সে দবীরবাসীদের বিরুদ্ধে যাত্রা করল; আগে দবীরের নাম কিরিয়ৎ-সেফর ছিল। 12 আর কালেব বললেন, “যে কেউ কিরিয়ৎ-সেফরকে আঘাত করে নিজের অধিকারে আনবে, তার সঙ্গে আমি নিজের মেয়ে অক্‌ষার বিয়ে দেব।” 13 এবং কালেবের ছোট ছেলে কনসের ছেলে অৎনীয়েল তা নিজের অধিকারে আনলে তিনি তার সঙ্গে নিজের মেয়ে অক্‌ষার বিয়ে দিলেন। 14 আর ঐ মেয়ে এসে তার বাবার কাছে একখানি জমি চাইতে স্বামীকে পরামর্শ দিল এবং সে গাধার পিঠ থেকে নামল; কালেব তাকে বললেন, “তুমি কি চাও?” 15 সে তাকে বলল, “আপনি আমাকে এক উপহার দিন; দক্ষিণাঞ্চল ভূমি আমাকে দিয়েছেন, জলের উনুইগুলিও আমাকে দিন।” তাতে কালেব তাকে উচ্চতর উনুইগুলি ও নিম্নতর উনুইগুলি দিলেন। 16 পরে মোশির সম্বন্ধীয় কেনীয়ের লোকেরা যিহূদার লোকদের সঙ্গে খর্জ্জূর[b]পুর থেকে অরাদের দক্ষিণদিকে অবস্থিত যিহূদা মরুপ্রান্তে উঠে গেল; তারা গিয়ে লোকদের মধ্যে বাস করল। 17 আর যিহূদা নিজের ভাই শিমিয়োনের সঙ্গে গেল এবং তারা সফাৎবাসী কনানীয়দেরকে আঘাত করে ওই নগর নিঃশেষে বিনষ্ট করল। আর সেই নগরের নাম হর্[c]মা [বিনষ্ট] হল। 18 আর যিহূদা ঘসা ও তার অঞ্চল, অস্কিলোন ও তার অঞ্চল এবং ইক্রোণ ও তার অঞ্চল অধিকার করল। 19 সদাপ্রভু যিহূদার সহবর্ত্তী ছিলেন, সে পাহাড়ী অঞ্চলগুলি অধিকার করল; কিন্তু সে তলভূমি-নিবাসীদেরকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারল না, কারণ তাদের লোহার রথ ছিল। 20 আর মোশি যেমন বলেছিলেন, সেই অনুসারে তারা কালেবকে হিব্রোণ দিল এবং তিনি সেখান থেকে অনাকের তিন ছেলেকে তাড়িয়ে দিলেন। 21 কিন্তু বিন্যামীনের লোকেরা যিরুশালেম-নিবাসী যিবূষীয়দেরকে তাড়ালো না; যিবূষীয়েরা আজ পর্যন্ত যিরুশালেমে বিন্যামীন লোকদের সঙ্গে বাস করছে। 22 আর যোষেফের বংশও বৈথেলের বিরুদ্ধে যাত্রা করল এবং সদাপ্রভু তাদের সহবর্ত্তী ছিলেন। 23 যোষেফের লোকেরা বৈথেলের খোঁজ-খবর নিতে লোক পাঠালেন। আগে ঐ নগরের নাম লূস ছিল। 24 আর সেই গুপ্তচরেরা ঐ নগর থেকে এক জনকে বাইরে আসতে দেখে তাকে বলল, “অনুরোধ করি, নগর প্রবেশের পথ আমাদেরকে দেখিয়ে দাও; দিলে আমরা তোমার প্রতি দয়া করব।” 25 তাতে সে তাদেরকে নগরে প্রবেশ করার রাস্তা দেখিয়ে দিল, আর তারা খড়গের আঘাতে সেই নগরবাসীদেরকে আঘাত করল, কিন্তু ঐ ব্যক্তিকে ও তার সমস্ত পরিবারকে ছেড়ে দিল। 26 পরে ঐ ব্যক্তি হিত্তীয়দের দেশে গিয়ে এক নগর সৃষ্টি করে তার নাম লূস রাখল; তা আজ পর্যন্ত সেই নামে পরিচিত আছে। 27 আর মনঃশি গ্রামগুলোর সঙ্গে বৈৎ-শান, গ্রামগুলোর সঙ্গে তানক, গ্রামগুলোর সঙ্গে দোর, গ্রামগুলোর সঙ্গে যিব্লিয়ম, ও গ্রামগুলোর সঙ্গে মগিদ্দো, এই সব জায়গার বসবাসকারীদের তাড়াল না; কনানীয়েরা সে দেশে বাস করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিল। 28 পরে ইস্রায়েল যখন শক্তিশালী হল, তখন সেই কনানীয়দেরকে তাদের দাস করল, কিন্তু সম্পূর্ণভাবে তাড়াল না। 29 আর ইফ্রয়িম গেষর-নিবাসী কনানীয়দেরকে বঞ্চিত করল না; কনানীয়েরা গেষরে তাদের মধ্যে বাস করতে লাগল। 30 সবূলূন কিটরোণ ও নহলোল নিবাসীদেরকে তাড়াল না; কনানীয়েরা তাদের মধ্যে বাস করতে লাগল, আর তাদের দাস হল। 31 আশের অক্কো, সীদোন, অহলব, অকষীব, হেল্‌বা, অফীক ও রহোব নিবাসীদের বঞ্চিত করল না। 32 আশেরীয়েরা কনানীয়দের মধ্যে বাস করল, কারণ তারা তাদেরকে তাড়াল না। 33 নপ্তালি বৈৎ-শেমশের ও বৈৎ-অনাত-নিবাসীদেরকে তাড়িয়ে দিল না; তারা কনানীয়দের মধ্যে বাস করল, আর বৈৎ-শেমশের ও বৈৎ-অনাতনিবাসীরা তাদের দাস হল। 34 আর ইমোরীয়েরা দানের বংশদেরকে পাহাড়ী অঞ্চলে থাকতে বাধ্য করল, উপত্যকা নেমে আসতে দিল না; 35 ইমোরীয়েরা হেরস পর্বত, অয়ালোনে ও শালবীমে বসবাস করতে থাকল; কিন্তু যোষেফ-কুল তাদের পরাজিত করল, তাতে তারা তাদের দাস হল। 36 অক্রব্বীম পাহাড়ী অঞ্চল থেকে সেলা পর্যন্ত উপরের দিকে ইমোরীয়দের অধিকারে ছিল।

বিচারকর্ত্তৃগণ 2 ->