Link to home pageLanguagesLink to all Bible versions on this site

ইষ্টের
গ্রন্থস্বত্ব
ইষ্টের পুস্তকের অপরিচিত গ্রন্থকার খুব সম্ভবতঃ একজন যিহুদী ছিলেন যিনি রাজকীয় পার্সিয়ান বিচারালয়ের সঙ্গে পরিচিত ছিলেন। রাজকীয় বিচারলয়ের বিস্তারিত বিবরণ এবং ঐতিহ্য সমূহ তথা ঘটনাবলী যা পুস্তকটির মধ্যে ঘটেছে, তা একজন প্রত্যক্ষ্যদর্শী গ্রন্থকারের দিকে ইঙ্গিত করে। পন্ডিতগণ বিশ্বাস করেন তিনি একজন যিহুদী ছিলেন যিনি অবশিষ্টাংশদের জন্য লিখেছিলেন যারা যিরুব্বাবেলের অধীনে ফিরে এসেছিল। কতিপয় প্রস্তাব দিয়েছেন যে মর্দখয় স্বয়ং গ্রন্থকার ছিলেন, যদিও পাঠ্যক্রমের মধ্যে তার জন্য যে প্র্শংসকগণকে দেখা যায় তারা অন্য এক ব্যক্তির প্রস্তাব দেয়, হয়ত সে তার যুবক সমকালীনদের মধ্যে একজন হবে যিনি গ্রন্থকার ছিলেন।
রচনার সময় এবং স্থান
আনুমাণিক 464 থেকে 331 খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যবর্তী সময়।
পার্সিয়ান রাজা অহোস্বেরশ 1 এর রাজত্বের দিনের প্রাথমিকভাবে পার্সিয়ান সাম্রাজ্যের রাজধানী শুশনের রাজপ্রাসাদের মধ্যে কাহিনীটি ঘটেছিল।
গ্রাহক
ইষ্টেরের পুস্তকটি লোক সমূহ দ্বারা ভোজনপানের অথবা পূরিমের উত্সবের অস্তিত্ত্বকে নথিভুক্ত করতে যিহুদী লোকেদের জন্য লেখা হয়েছিল। বাত্সরিক উত্সব যিহুদী লোকেদের জন্য ঈশ্বরের পরিত্রানের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, অনুরূপভাবে মিশরের দাসত্ব থেকে তাদের উদ্ধার।
উদ্দেশ্য
এই পুস্তকটির উদ্দেশ্য হলো মানুষের ইচ্ছার সাথে ঈশ্বরের মিথস্ক্রিয়াকে, জাতিগত কুসংষ্কারের প্রতি তাঁর ঘৃণা, তাঁর প্রজ্ঞার ক্ষমতা দান এবং বিপদের দিনের সাহায্য প্রদান করাকে দেখানো। লোকেদের জীবনে ঈশ্বরের হস্ত কার্যরত হয়। তিনি ইষ্টেরের জীবনের পরিস্থিতিকে ব্যবহার করলেন, যেমন তিনি সমস্ত মানুষের সিদ্ধান্ত এবং কার্যক্রমকে ব্যবহার করেন তাঁর পরিকল্পনা এবং উদ্দেশ্যকে ঐশ্বরিকভাবে কার্যকরী করতে। ইষ্টেরের পুস্তকটি পূরীমের উত্সবের প্রতিষ্ঠানকে নথিভুক্ত করে এবং ইহুদীরা আজ এখনও পূরিমের দিনের ইষ্টেরের পুস্তকটিকে পাঠ করে।
বিষয়
সংরক্ষণ
রূপরেখা
1. ইষ্টের রাণী হন — 1:1-2:23
2. ঈশ্বরের ইহুদীদের প্রতি বিপদ — 3:1-15
3. ইষ্টের এবং মর্খদক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে — 4:1-5:14
4. য়িহুদীদের মুক্তি — 6:1-10:3

1
বষ্টী রাণীর পদচ্যুতি।
1 কুশ দিনের এই ঘটনা ঘটল। ঐ অহশ্বেরশ ভারত থেকে কূ[a]শ দেশ পর্যন্ত একশো সাতাশ দেশের ওপরে রাজত্ব করতেন। 2 সেই দিনের অহশ্বেরশ রাজা শূশন রাজধানীতে রাজসিংহাসনে বসেছিলেন৷ 3 তাঁর রাজত্বের তৃতীয় বছরে নিজের সমস্ত শাসনকর্ত্তা ও দাসদের জন্য এক ভোজ তৈরী করলেন। পারস্য ও মাদিয়া দেশের সেনাপতিরা, রাজপুত্রেরা ও প্রদেশের শাসনকর্তারা তাঁর সামনে উপস্থিত হলেন। 4 তিনি অনেক দিন অর্থাৎ একশো আশি দিন ধরে তাঁর মহিমান্বিত রাজ্যের ঐশ্বর্য্য ও নিজের মহানতার গৌরব দেখালেন। 5 সেই সব দিন সম্পূর্ণ হলে পর রাজা শূশন রাজধানীতে থাকা ছোট কি বড় সমস্ত লোকের জন্য রাজবাড়ির বাগানের উঠানে সারা সপ্তাহ ধরে ভোজের আয়োজন করলেন। 6 সেখানে কার্পাসের তৈরী সাদা ও নীল রঙের পর্দা ছিল, তা সূক্ষ সুতোর বেগুনী দড়ির মাধ্যমে রূপালি রঙের কড়াতে পাথরের থামে আটকে ছিল এবং লাল, সাদা, সবুজ ও কালো মার্বেল পাথরে কারুকার্য্য করা মেঝেতে সোনার ও রূপার আসনের সারি রাখা ছিল। 7 আর রাজার উদারতা অনুসারে সোনার পাত্রে পানীয় ও প্রচুর রাজকীয় আঙ্গুরের রস দেওয়া হল, সেই সব পাত্র নানা ধরনের ছিল। 8 তাতে ব্যবস্থা অনুযায়ী পান করা হল, কেউ জোর করল না; কারণ যার যেমন ইচ্ছা, সেই অনুযায়ী তাকে করতে দাও, এই আদেশ রাজা নিজের বাড়ির সমস্ত কর্মচারীকে দিয়েছিলেন। 9 আর বষ্টী রাণীও অহশ্বেরশের রাজবাড়ীতে মহিলাদের জন্য ভোজ তৈরী করলেন। 10 সপ্তম দিনের যখন রাজা আঙ্গুরের রস পান করে আনন্দিত ছিলেন, তখন তিনি মহূমন, বিস্থা, হর্বোণা, বিগ্‌থা, অবগথ, সেথর ও কর্ক্কস নামে যারা, অহশ্বেরশ রাজার সামনে সেবা করতেন এই সাত জন নপুংসককে[b] আদেশ দিলেন, 11 যেন তারা প্রজাদের ও শাসনকর্তাদেরকে বষ্টী রাণীর সৌন্দর্য্য দেখাবার জন্য তাঁকে রাজমুকুট পরিয়ে রাজার সামনে আনে; কারণ তিনি দেখতে সুন্দরী ছিলেন। 12 কিন্তু বষ্টী রাণী নপুংসকদের মাধ্যমে পাঠানো রাজার আদেশ মত আসতে রাজি হলেন না; তাতে রাজা খুব রেগে গেলেন, তাঁর মধ্যে রাগের আগুন জ্বলে উঠল। 13 পরে রাজা দিন সম্পর্কে জ্ঞানী লোকদেরকে এই বিষয় বললেন; কারণ আইন ও বিচার সম্মন্ধে জ্ঞানী লোক সবার কাছে রাজার এই রকম বলবার রীতি ছিল। 14 আর কর্শনা, শেথর, অদ্‌মাথা, তর্শীশ, মেরস, মর্সনা ও মমূখন, এরা তাঁর কাছে ছিলেন; এই সাত জন পারস্য ও মাদিয়া দেশের শাসনকর্ত্তা রাজার সামনে যেতেন এবং রাজ্যের শ্রেষ্ঠ জায়গার অধিকারী ছিলেন। 15 [রাজা বললেন,] “বষ্টী রাণী নপুংসকদের মাধ্যমে পাঠানো অহশ্বেরশ রাজার আদেশ মানে নি, অতএব আইন অনুসারে তার প্রতি কি করা উচিত?” 16 তখন মমূখন রাজার ও শাসনকর্ত্তাদের সামনে উত্তর করলেন, “রাণী বষ্টী যে কেবল মহারাজের কাছে অন্যায় করেছেন, তা নয়, কিন্তু রাজা অহশ্বেরশের অধীন সমস্ত দেশের সমস্ত শাসনকর্ত্তার ও সমস্ত লোকের কাছে অপরাধ করেছেন। 17 কারণ রাণীর এই কাজের কথা সমস্ত স্ত্রীলোকদের মধ্যে জানাজানি হয়ে যাবে; সুতরাং রাজা অহশ্বেরশ বষ্টী রাণীকে নিজের সামনে আনতে আদেশ দিলেও তিনি আসলেন না, এই কথা শুনলে তারা নিজের চোখে তাদের স্বামীকে তুচ্ছজ্ঞান করবে। 18 আর পারস্য ও মাদিয়ার সম্মানিতা স্ত্রীলোকেরা রাণীর এই কাজের খবর শুনলেন, তাঁরা আজই রাজার সব শাসনকর্তাকে ঐরকম বলবেন, তাতে খুব অসম্মান ও রাগ জন্মাবে। 19 যদি মহারাজের ইচ্ছা হয়, তবে বষ্টী অহশ্বেরশ রাজার সামনে আর আসতে পারবেন না, এই রাজ আদেশ আপনার মুখ থেকে বেরিয়ে আসুক এবং যা অমান্য করা যাবে না, এই জন্য এটা পারসীকদের আদেশ ও মাদীয়দের আইনের মধ্যে লেখা হোক; পরে মহারাজ তাঁর রাণীর পদ নিয়ে তাঁর থেকে ভালো আর এক রাণীকে দিন। 20 মহারাজ যে আদেশ দেবেন, তা যখন তাঁর বিরাট রাজ্যের সব জায়গায় প্রচারিত হবে, তখন সমস্ত স্ত্রীলোক ছোট কি বড় নিজের নিজের স্বামীকে সম্মান করবে।” 21 এই কথা রাজার ও অধ্যক্ষদের ভালো লাগলে রাজা মমূখনের কথানুযায়ী কাজ করলেন। 22 তিনি এক এক দেশের অক্ষর অনুসারে ও এক এক জাতির ভাষা অনুসারে রাজার অধীন সমস্ত দেশে এই রকম চিঠি পাঠালেন, প্রত্যেক পুরুষ নিজের নিজের বাড়িতে কর্তৃত্ব করুক ও নিজের ভাষায় এটা প্রচার করুক।

ইষ্টের 2 ->